নিজস্ব প্রতিবেদক
আড়াই মাস ধরে ২০০ টাকার কম বা সামান্য বেশি দাম থাকা কাঁচা মরিচের দাম এখন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। ১৫০ টাকার গোল বেগুন এখন ২২০ টাকা। এছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়ে ১০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে। বিক্রেতারা বলছে, পূজার কারণে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ ও টানা দুদিনের বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি। তবে সাধারণ ক্রেতারা মনে করেন, বাজারে সব কিছুর দামই বাড়তি। এটা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। বাজার তদারকির অভাবেই এমনটি হচ্ছে বলে মনে করেন তারা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবরে) রাজধানীর পুরান ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে থাকা বেগুনের দাম এখন আরও চড়া। ৭০ টাকার গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২২০ টাকায়। ২০ টাকা বেড়েছে লম্বা ও সাদা গোল বেগুনের দাম। এগুলোর দাম যথাক্রমে ১০০ ও ১৪০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা করে বেড়েছে গাজর, টমেটো, ঢ্যাঁড়শ, বরবটি, করলা, ধুন্দল, চাল কুমড়োর দাম। গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ১৪০, ঢ্যাঁড়শ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, করলা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চাল কুমড়ো এখন ৬০ টাকা কেজি। এছাড়া ঝিঙা ৮০, কচুরমুখী ৮০, কাঁকরোল ৭০, শসা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০, মুলা ৬০, লাউ ৭০, আলু ২৫ টাকা প্রতি কেজি। তবে পেঁপের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২৪০ টাকার সিম এখন ১৬০ টাকা কেজি।

কাঁচা মরিচের দাম ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছে
এ বছরের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত কাঁচা মরিচের দাম ছিল প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে। গত কয়েক দিনে দাম বেড়েছে ১০০ টাকার মতো। এখন সাধারণ কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকা। একটু ভালো জাতের মরিচের দাম ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি।
রায় সাহেব বাজারের বিক্রেতা সেলিম মিয়া বলেন, পূজার কারণে ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত বর্ডারগুলো বন্ধ রয়েছে। আর টানার বৃষ্টির প্রভাব তো আছেই। বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। দাম কিছুটা বেশি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এ সিজনে বেশিরভাগ মরিচ আসে ভারত থেকে। এসময় আমাদের দেশে মরিচ খুবই কম হয়। যখন আমদানি বন্ধ হয়, বাজারে চাহিদা বাড়ে। ফলে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন।
রায় সাহেব বাজারের বিক্রেতা আবু সাঈদ বলেন, বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কম। পূজার কারণে ইন্ডিয়ার মাল আসা আসা বন্ধ রয়েছে। আবার বাজারে ক্রেতা কম। পূজার ছুটিতে অনেকে গ্রামে গিয়েছে। এরপরও দাম কিছুটা বেড়েছে।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে দেখে আসছি— বাজারে মাছ, মাংস, সবজির দাম বেশি। আজ তো বাজারে ক্রেতা কম। এরপরও দাম বেশি। ব্যবসায়ীদের একটা চক্র আছে। এরা সিস্টেম করে দাম বেশি রাখে। এদের কেউ দেখে না, ধরেও না। বেশিরভাগ সবজির দামই এখন ১০০ টাকার কাছাকাছি। মানুষ খাবে কী?
মাছ ও মুরগি বিক্রি হচ্ছে আগের দামে
গত সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগির দাম এখন কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগির কেজি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা। খাসির মাংস ১৩০০ টাকা, বকরি ১০০০ টাকা, আর গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা।
সূত্রাপুর বাজারের বিক্রেতা মজিবুর রহমান বলেন, বৃষ্টির কারণে বাজারে মুরগির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়ছে। কিন্তু আমরা সে বাড়তি দাম নিতে পারছি না। পূজার ছুটিতে অনেকে গ্রামে চলে গেছে। ক্রেতা কম। সেজন্য এখন লস দিয়েই বিক্রি করছি।
শিপ্র/শাহোরা/