শিরোনাম প্রতিদিন ডেস্ক
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাবন্দি থাকার মধ্যেই তার মুক্তির দাবিতে তুমুল বিক্ষোভে উত্তাল রাজধানী ইসলামাবাদ। এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবি। সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগে কারাভোগের পর মুক্তি পাওয়া বুশরা এখন ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বিক্ষোভকারীদের অন্যতম মুখ।
গত সোমবার রাতে ইসলামাবাদের ডি-চকে পিটিআইয়ের প্রায় ১০ হাজার কর্মী-সমর্থক জড়ো হন। কিন্তু মঙ্গলবার মধ্যরাতের আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে এবং আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।
সংঘর্ষের আগেই প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে পিটিআই কর্মীদের সামনে আসেন বুশরা বিবি। তিনি একটি ট্রাকের ওপর থেকে কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আজ আপনাদের একটি প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। ইমরান খান এখানে না আসা পর্যন্ত আপনারা চলে যাবেন না।”
এই বক্তব্যের জন্য বুশরাকে দায়ী করেছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি। তিনি বলেন, “ইসলামাবাদে সংঘাতের জন্য শুধুমাত্র বুশরা বিবিই দায়ী।”
বুশরা বিবিকে এতদিন অরাজনৈতিক বলে বিবেচনা করা হলেও সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে ভিন্ন রূপ দেখা যাচ্ছে। লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসমা ফাইজ বলেন, “বুশরা বিবিকে অনেকেই হুমকি মনে করতেন না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের তার ভূমিকা সেই ধারণা বদলে দিয়েছে।”
ইমরানের সাথে আধ্যাত্মিক পরামর্শের সূত্রে বুশরার ঘনিষ্ঠতা এবং পরে ২০১৮ সালে তাদের বিয়ে নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। পাকিস্তান সরকার বুশরার বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং ইসলামি আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে।
ওয়াশিংটনের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, “ইমরানের সাথে সম্পর্কের কারণেই বুশরা বিক্ষোভকারীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। তবে তার নেতৃত্ব দলীয় ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে।”
তবে পিটিআই বলছে, বুশরা কোনো রাজনৈতিক নেতা নন, বরং একজন স্ত্রী হিসেবে ইমরানের বার্তাগুলো কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।
ইসলামাবাদের এই বিক্ষোভে বুশরার ভূমিকা অনেকের মনে করিয়ে দিয়েছে বেনজির ভুট্টো বা মারিয়াম নওয়াজের মতো নারী নেত্রীদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ লিখেছেন, যখন দাবার সৈনিকেরা পরাজিত হয়, তখন রানি এগিয়ে আসেন।
শিপ্র/শাহোরা/