নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনে হাওয়া ক্রীড়াঙ্গনকেও নাড়া দিয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন ফেডারেশনের কার্যক্রম স্থবির পড়েছিল। তবে ক্রীড়াঙ্গনে প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। খেলাধুলাকে এগিয়ে নিতে ক্রীড়া সাংবাদিকদের পরামর্শ গ্রহণ করেন এই উপদেষ্টা।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে ক্রীড়াঙ্গনের সার্বিক উন্নয়নে ক্রীড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন আসিফ মাহমুদ। এ সময়ে অনুমান ভিত্তিক খবর না করে সাংবাদিকদের ক্রীড়া ক্ষেত্রের সব অনিয়ম তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।
ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা ইতোপূর্বে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছেন। আশা করি, সামনেও করবেন। শুধু খেলোয়াড় কি করলেন, কি খেলেন এর বাইরেও খেলার অনিয়ম-অসঙ্গতি অনুসন্ধান প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে আনবেন। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। দর্শক হিসেবে আগে দেখেছি থাম্ব এবং শিরোনাম এক রকম। ভেতরের কন্টেন্ট অন্যরকম। অনেক প্রতিবেদন দেখেছি অনুমান নির্ভর। যা খেলার আগে খেলোয়াড়দের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে।’
এদিকে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে দুর্নীতির ঘটনা বহু পুরোনো। রাজনৈতিক কর্মীদের ছত্রচ্ছায়ায় ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোয় টাকাপয়সা নানাভাবে নয়ছয় হয়েছে। আজকের সভায় ক্রীড়াঙ্গন থেকে দুর্নীতি নির্মূল করার অঙ্গীকার করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘দুর্নীতি হয় মূলত সিন্ডিকেট গঠনের কারণে, যেটা আমরা দেখেছি। প্রত্যেক জায়গায় যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তারা একটা সিন্ডিকেট করে ফেলে। তারপর নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে। সে জন্য সিন্ডিকেট যাতে না হতে পারে, তাই একটা ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা তো প্রত্যেক জায়গায় ধরে ধরে ঠিক করতে পারব না। সে জন্য সিন্ডিকেট যাতে না হতে পারে, সেই ব্যবস্থা হিসেবে স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক, ছাত্রপ্রতিনিধি রেখেছি।’
অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। সব সেক্টরে সংস্কার চলছে, সেটাই মনে করিয়ে দিলেন আসিফ মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘ক্রীড়া সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে একজন উপদেষ্টা নয়, সাধারণ একজন মানুষ হিসেবে বলছি। একজন ক্রীড়ানুরাগী হিসেবে যখন অনুসরণ করতাম, আমি যেটা দেখেছি আসলে, থাম্বনেইলের সঙ্গে বা ক্যাপশনের সঙ্গে কনটেন্টের মিল খুঁজে পাওয়া কষ্ট হয়ে যায়। তো আমার মনে হয়, এই জায়গা থেকে আপনারা যাঁরা দায়িত্বে আছেন, আরও বস্তুনিষ্ঠভাবে করা যায় এবং অংশীদার হিসেবে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, সেদিকে মনোযোগ দেবেন।’
সভায় ক্রীড়া কমপ্লেক্সগুলোর অব্যবস্থাপনা, বিসিবির অনিয়ম, ফেডারেশনগুলোর অসঙ্গতিসহ অনেক বিষয় তুলে আনেন সাংবাদিকরা। এ সময়ে দেশের স্কুল পর্যায়ে ক্রীড়া ব্যবস্থাকে আরও প্রসারিত করার পরামর্শও দেন ক্রীড়া সাংবাদিকরা। এ ছাড়া উন্মুক্ত খেলার মাঠ করার আহ্বান জানানো হয়।
শিপ্র/শাহোরা/