গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে বসত বাড়ির বারান্দা থেকে ইতি আক্তার (২১) নামে এক সৌদী প্রবাসীর স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ । শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রামের আ. জলিলের বাড়ি থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইতি জেলার কাপাসিয়া উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ঘিগাট গ্রামের মো. বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। ৫ বছর আগে শ্রীপুরে রাজাবাড়ি ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রামের আ.জলিলের ছেলে মো. আক্তার হোসেনের সাথে পারিবারিকভাব বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই বছর বয়সী আফরিন নামে একটি কন্যা সন্তার রয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানান, বিয়ের কিছু দিন পর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ইতির শশুর বাড়ির লোকজন তাকে মারধরসহ নির্যাতন করতো। মেয়ের সুখের কথা ভেবে ইতির স্বামীকে তার বাবার বাড়ি থেকে দেয়া টাকায় সৌদীতে পাঠানো হয়। শ্বশুড় বাড়ীর টাকায় আক্তারকে সৌদি আরব পাটানো হলেও এরপরেও থামেনি ইতির শাশুড়ি- ননদের নির্যাতন। একাধিকবার ইতি নির্যাতিত হয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসলেও তাকে বুজিয়ে ফের স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হতো। কিছুদিন পূর্বে এভাবে নির্যাতিত হয়ে ইতি বাবার বাড়ি চলে আসে। পরে আক্তার দেশে ফিরে তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। এক মাস পূর্বে আক্তার স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে প্রবাসে ফিরে যান। শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ইতির মাকে স্বামীর বাড়ি থেকে ফোন করে জানায় তাদের মেয়েকে দেখতে হলে দ্রুত ওই বাড়িতে যেতে। তখন ওই বাড়িতে গিয়ে স্বজনরা ইতির মরদেহ বারান্দায় দেখতে পায়।
নিহতের মা বিলকিছ বেগম হত্যার অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ের মৃত্যূ কোন স্বাভাবিক মৃত্যূ বা আত্মহত্যা নয় এটা একটি পরিকল্পিত হত্যা। সকালে ফোন করে জানানো হয় ইতিকে দেখতে হলে দ্রুত ইতির শ্বশুর বাড়িতে যেতে। আমি সাথে সাথে এ বাড়ীতে এসে বারান্দায় মেয়ের মরদেহ দেখতে পাই। সে আত্নহত্যা করলে ঝুলন্ত থাকতো। বাড়ির লোকজন মরদেহ নামালো কেন? আমার মেয়ে মরতে পারেনা। তাকে মেরে এখন বলছে সে আত্নহত্যা করেছে।
নিহতের ননদ মিনারা জানান, আমি কাজ করার সময় ভাবীকে ঘরে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। তখন বুঝিনি সে আত্নহত্যা করেছে। পরে দেখি সে ফাঁসিতে ঝুলে আছে।
দেবর আফজাল জানান, আমি ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজার সময় ভাবীকে দাড়িয়ে থাকতে দেখি। কাছে গিয়ে দেখতে পাই সে ঝুলে আছে। আমরা দ্রুত তাকে ঝুুলন্ত অবস্থা থেকে নামাই। পরে দেখি সে মারা গেছে।
ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার এসআই মো. আক্রাম হোসেন জানান, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে বশত ঘরের বারান্দায় ওই নারীর মরদেহ দেখেতে পাই। ঘরের আড়ায় একটি উড়না বাঁধা ছিলো। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যূর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে না। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তার ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিপ্র/শাহোরা/আসা/