নরসিংদী প্রতিনিধি
নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকৃত প্রতারক, নারীলিপ্সু অর্থলোভী আব্দুল আজিজকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্ত্রী সুমি আক্তার। রবিবার বিকেল নরসিংদী জেলা সাংবাদিক সংস্থার কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মাছিমনগর এলাকার আব্দুল আউয়ালের মেয়ে সুমি আক্তার জানান, তার স্বামীর ঘরে দুই মেয়েকে রেখেই বরগুনা জেলার সদর উপজেলার চরকগাছিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজকে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করে। আব্দুল আজিজ হাউজিং কোম্পানির রিক্রুটিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করতো। বিয়ের সুমি বেগম তার বাবার সম্পত্তি বিক্রি করে ১৬ লাখ একটি ব্যাংকে জমা রাখে। এদিকে অর্থলোভী আব্দুল আজিজের নজর পরে। সেই টাকা হাতিয়ে নিতে সে তার স্ত্রী সুমি আক্তারকে একটি ফ্ল্যাট কিনে দেবার কথা বলে। যেমন কথা তেমন কাজ প্রতারক আব্দুল আজিজ তার স্ত্রী সুমিকে মিরপুর পল্লবী এলাকার ডেল্টা ব্রাঞ্চ হাউজিং কোর্পরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যায়। সেখানে ওই কোম্পানির মালিক পরিচয় হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ২৫ লাখ টাকায় তার সাথে ফ্ল্যাটের দরদাম ঠিক। পরে সুমি আক্তার তার স্বামী আব্দুল আজিজের হাতে কয়েক বারে ১৬ লাখ তুলে দেয়। পূর্ববর্তীতে তার সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণের গহনা যার তৎকালীন মূল দেড় লাখ টাকা। স্বামীর হাতে দেন। স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেওয়ার স্ত্রী সুমি কাজ ফুরিয়ে গেছে তার কাছ নেওয়ার আর কিছু নেই এই ভেবে প্রতারক আব্দুল আজিজ সটকে পড়েন।
সুমি আক্তার বলেন, কয়েকদিন ধরে স্বামীর কোন সন্ধান না পেয়ে বরগুনায় তার গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে উঠেন তিনি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তার আগে আরও তিনটি বিয়ে করেছেন আব্দুল আজিজ। তিনি তার চতুর্থ স্ত্রী। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন আজিজ যেই ঘরটিতে তার তৃতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছে সেই দ্বিতল ভবনটি সুমির পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রির সেই ১৬ টাকা দিয়ে করা। সুমিকে নিজের বাড়ীতে হকচকিয়ে উঠেন। তার টাকা তাকে ফেরত দিয়ে দিবেন বলে তাকে সেখান থেকে নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার রায়েরবাগ এলাকায় এসে উঠে। সেখানে এনে প্রায় সময় সুমির উপর অমানুষিক নির্যাতন চালাত। এঘটনায় সমি আক্তার বাদী ঢাকা জজ আদালতে একটি পারিবারিক মামলা দায়ের করেন। পরে আব্দুল সেখান থেকে বাসা বদল করে নরসিংদীর বাসাইল এলাকায় নিয়ে আসে। এখানে আসার পর নারীলিপ্সু আব্দুল আজিজের চোখ পড়ে সুমি প্রথম পক্ষের কিশোরী মেয়ে মিতু উপর। সে মোবাইল ফোনে প্রায় সময় কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। এক সময় মিতু তার মায়ের কাছে বেড়াতে আসলে একদিন ফাঁকা ঘরে ঘরের দরজা বন্ধ করে মিতু ঝাপ্টে ধরে এবং তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এসময় মিতু ডাক চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে আসতে থাকে এসময় সুমিকে ঘরে ফিরে আসতে দেখে পালিয়ে যায় লম্পট আজিজ। এঘটনায় সুমি বাদী হয়ে নরসিংদী জজ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আজিজকে আসামীর করে একটি মামলা দায়ের করেন।
বর্তমানে এ মামলায় আসামীর আব্দুল আজিজের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত বলে জানান বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. সাথী আক্তার।
এদিকে আসামী আব্দুল আজিজের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে দাবী করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এ অবস্থায় বাদী সুমি বেগম সংবাদ সম্মেলনে তার প্রতারক ও লম্পট স্বামীকে আইনের আওতার এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
শিপ্র/শাহোরা/