বিনোদন ডেস্ক
‘হৈমন্তী’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বিখ্যাত ছোটগল্প। এ গল্পের অঙ্গ অঙ্গে রয়েছে প্রাণবন্ত এক জুটির রোমাঞ্চ ও ভালোবাসার স্পর্শ। আছে যৌতুকে আক্রান্ত সমাজের প্রতিচ্ছবি। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হৈমন্তী। তাকে ঘিরেই গল্পের প্লট নির্মিত। হৈমন্তী, তার বাবা, স্বামী, শ্বশুরালয়, শ্বশুরালয়ের যাবতীয় ভালোমন্দ তাকে ঘিরেই আবর্তিত। গল্পে খুঁজে পাওয়া যায় তৎকালীন হিন্দু সমাজের একটি বিকৃত চেহারা। নারীর প্রতিবাদী রূপও উঠে এসেছে এখানে।
এ গল্প নিয়ে কালে কালে অনেক নাটক-সিনেমাই তৈরি হয়েছে। আরও একবার রঙিন পর্দায় আসছে হৈমন্তী। মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন এটি নির্মাণ করেছেন ‘হৈমন্তীর ইতিকথা’ নামে। এতে হৈমন্তী চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঐশিকা ঐশী। এ সিনেমা দিয়েই বড়পর্দায় অভিষেক হচ্ছে অভিনেত্রীর। এতে তার বিপরীতে অপু চরিত্রে দেখা যাবে সাইফ খানকে। হৈমন্তীর বাবা গৌরিশঙ্কর চরিত্রে দেখা যাবে খলিলুর রহমান কাদেরীকে।
অনেক আগেই ছবিটির শুটিং শেষ হয়েছে। সেন্সর ছাড়পত্রও এসে গেছে। এবার এলো মুক্তির ঘোষণা। গেল ১৩ মে সংবাদ সম্মেলনে ছবির পরিচালক জানান, ২৬ জুলাই সিনেমাটি সারা দেশে মুক্তি পাবে।
সেই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরি এমপি, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী লিলি ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজ্জাদ আলম খান তপুসহ চলচ্চিত্রের কলাকুশলীরা। অতিথিরা ‘হৈমন্তীর ইতিকথা’ সিনেমার সাফল্য কামনা করেন।
সেখানে পরিচালক মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ‘আমি সব সময়ই চেষ্টা করেছি মানুষ ও সমাজকে ভাবায় এমন গল্পে সিনেমা নির্মাণ করতে। স্বপ্ন ছিল রবিঠাকুরের গল্প নিয়ে কাজ করার। সেসব ভাবনা থেকে হৈমন্তী গল্পটি বেছে নিয়েছি। আমার টিম ও সব শিল্পীকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই। প্রত্যেকেই আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করেছেন। ছবিটি দর্শকের জন্য মুক্তি দিতে যাচ্ছি ২৬ জুলাই। সবাইকে হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
ছবির অভিনেতা সাইফ খান বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত এ সিনেমায় কাজ করতে পেরে। যেকোনো সাহিত্যনির্ভর গল্পের সিনেমায় কাজ করার স্বপ্ন দেখেন সব অভিনেতা। আর যদি সেটা হয় কবিগুরুর কোনো সাহিত্য তাহলে তো কথাই নেই। ছবির পরিচালককে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা, এ সিনেমায় আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য। আমি অপু চরিত্রে কাজ করেছি। এ চরিত্রটি কমবেশি সবারই চেনাজানা। নতুন করে কিছু করে দেখানোর সুযোগ কম। তবু আমি পরিচালকের নির্দেশনা মেনে কাজ করেছি। দর্শকের মনে দাগ কাটলেই আমার শ্রম ও স্বপ্ন সফল হবে।’
হৈমন্তীর ইতিকথা দিয়ে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা ঐশিকা ঐশী বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে সিনেমায় কাজ করতে এসেছি। আর প্রথম সিনেমাতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যের চরিত্রে হাজির হতে যাচ্ছিÑএটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। মির্জা সাখাওয়াৎ ভাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তার মতো গুণী পরিচালকের সঙ্গে কাজ করাটাও আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমি সব দর্শককে অনুরোধ করব হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখবেন।’
এ ছবির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঝুনা চৌধুরী, রাশেদা চৌধুরী, মুনা আক্তার, অরূপ কুণ্ডু, মো. আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, আনিছুর রহমান, সিনথিয়া লিজা, শিশু শিল্পী সিমন্তিনী চৌধুরী প্রমুখ।
এ ছবিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি রবীন্দ্রসংগীত। সেগুলোয় কণ্ঠ দিয়েছেন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ড. অণিমা রায়, মামুন জাহিদ, শিমু দে ও জয়ন্ত আচার্য্য। সংগীতায়ন করেছেন দীনবন্ধু দাশ।
শিপ্র/শাহোরা/