শিরোনাম :
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জল দৃষ্টান্ত; পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সমস্যাগুলো স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে ; ড. বদিউল আলম আ’লীগ নেতা কায়সার থেকে জমি কিনে অনেকেই জিম্মি; টাকা চাইলেই হুমকি! মোদির উপহার দেওয়া সেই কালী ঠাকুরের স্বর্ণের মুকুট চুরি আবারও আয়করমুক্ত সুবিধা পেলো গ্রামীণ ব্যাংক ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে দেব না: আসিফ মাহমুদ সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দূর্গোৎসব পালিত হচ্ছে ড.মঈন খান নরসিংদীতে ঘোড়াদিয়া মধ্যপাড়া টিভি কাপ টুর্নামেন্টের ফাইনাল রাজশাহী জেলা পরিষদ প্রশাসকের বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন শান্তিতে নোবেলজয়ী সংস্থাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ড. ইউনূস
শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২১ অপরাহ্ন

ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করাসহ সকল বিভাগের সংস্কার করব সহযোগিতা করুন

Reporter Name / ১১ Time View
Update : বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক 

ছাত্র-জনতাসহ সবার সহযোগিতা চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করাসহ আমাদের ওপর যে সংস্কারের গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দায়িত্ব দিয়ে আপনারা দর্শকের গ্যালারিতে চলে যাবেন না।

দেশের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করার লক্ষ্যে, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের বয়স সাড়ে বারো বছরের কম ছিল, তাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকা হতে বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিলের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন তিনি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের আওতাধীন বেদখলকৃত স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক পৃহিত বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন এর খসড়া তৈরির কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা সংস্কার চাই। আমাদের একান্ত অনুরোধ, আমাদের ওপর যে সংস্কারের গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দায়িত্ব দিয়ে আপনারা দর্শকের গ্যালারিতে চলে যাবেন না।

আপনারা আমাদের সাথে থাকুন। আমরা একসাথে সংস্কার করব। এটি আমাদের সবার দায়িত্ব। তিনি বলেন, আপনারা নিজ নিজ জগতে সংস্কার আনুন।

একটি জাতির সংস্কার শুধুমাত্র সরকারের সংস্কার হলে হয় না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনি ব্যবসায়ী হলে আপনার ব্যবসায় সংস্কার আনুন। ব্যবসায়ী গোষ্ঠীরা তাদের নিজ নিজ সমিতির মাধ্যমে সংস্কার আনুক। সমিতিতে সংস্কার আনুন। নতুন করে সমিতির গঠনতন্ত্র সংশোধন করুন। আপনি শ্রমিক হলে আপনার ক্ষেত্রে আপনি সংস্কার করুন। আপনি রাজনৈতিক নেতা-কর্মী হলে আপনার ক্ষেত্রে সংস্কার করুন। আপনি প্রতিষ্ঠান প্রধান হলে আপনার প্রতিষ্ঠানে সংস্কার আনুন।

তিনি বলেন, আমি এটিকে সুযোগ হিসেবে নিতে জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। এ সংস্কারের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চাই। এ যাত্রা আমাদের পৃথিবীর একটি সম্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুক, এটি আমাদের সবার কাম্য।

ড. ইউনূস বলেন, আপনারা জানেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে এবং হাজারো মানুষের আত্মদানের বিনিময়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। এ গণঅভ্যুত্থানের বার্তা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য একটি অভূতপূর্ব সময় ও সুযোগ আমরা এর মধ্যে দিয়ে অর্জন করেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিজম বা স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা রোধ এবং জনমালিকানাভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ সংস্কার ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।

ড. ইউনূস বলেন, আমাদের সামনে অনেক কাজ। সবাই মিলে একই লক্ষ্যে আমরা অগ্রসর হতে চাই। আমাদের মধ্যে, বিশেষ করে আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে আছে সেটা যেন বিনা বাধায়, রাষ্ট্রের এবং সমাজের সহযোগিতায় প্রকাশ করতে পারি, সেই সুযোগের কাঠামো তৈরি করতে চাই।

তিনি বলেন, সবাই মিলে আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে, সে ঝাড়ুদার হোক, ছাত্র হোক, শিক্ষক হোক, যেকোনো ধর্মের হোক, সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। এই হলো আমাদের সংস্কারের মূল লক্ষ্য। আসুন ছাত্র, শ্রমিক, জনতার এ বিপ্লবের লক্ষ্যকে আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন করি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের প্রথম মাসে আমরা যে গতিতে, যে উদ্যম নিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করেছিলাম, হয়তো সেটা করতে পারিনি বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা গেলে আশা করি, আমরা আমাদের গতি অনেক বাড়াতে পারব। এজন্য দেশের সব মানুষের কাছে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবী, বড় ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুর ও গৃহিণী সবার সহযোগিতা চাইছি।

তিনি বলেন, আমাদের কাজ বড় কঠিন, কিন্তু জাতি হিসেবে এবার ব্যর্থ হওয়ার কোনো অবকাশ আমাদের নেই। আমাদের সব হতেই হবে। এ সাফল্য আপনাদের কারণেই আসবে। আপনার সহযোগিতার কারণে আসবে। আমাদের কাজ হবে আপনার, আমার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপায়িত করা। এখন আমরা দ্বিতীয় মাস শুরু করছি। আমাদের দ্বিতীয় মাসে যেন আপনাদের মনে দৃঢ় আস্থার সৃষ্টি করতে পারি সে চেষ্টা করে যাব।

ড. ইউনূস বলেন, ধৈর্য ধরুন, এ কথাটি আমি মোটেই আপনাদের বলব না। আমরা সবাই অধৈর্য হয়ে পড়েছি, এতসব কাজ কখন যে শেষ হবে এই চিন্তা করে! আমরা অধৈর্য হব, কেন হব না। কিন্তু সঠিকভাবে কাজ করব। কাজে কোন অধৈর্যের চিহ্ন রাখব না।

শিপ্র/শাহোরা/


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!