বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায়, মানুষের ঘরবাড়ি হাঁস মুরগির খামার,প্রাণিসম্পদ, মৎস্য সম্পদ, ধান সহ বিভিন্ন ফসলের বীজ তলার জমির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় কৃষকদের আবাদ করা শাকসবজি ও আমন ধানের বীজতলা নিমজ্জিত হয়ে সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে যায়। ফলে প্রান্তিক কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় রাস্তাঘাটসহ সেবা খাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায, বন্যায় দেশের প্রায় ৫০ লাখ বানভাসি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের ১২টি জেলার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছেন রাস্তা-ঘাটসহ ফসলি জমি। এতে আবাদকৃত ১ লাখ ৭৬ হাজার মেট্রিক টন শাকসবজি নষ্ট হয়ে গেছে। যার মূল্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।
ইতোমধ্যে দেশের বন্যার্ত এলাকাগুলো থেকে ধীরে ধীরে পানি নামাতে শুরু করেছে। রোপা আমনের মাঠগুলো থেকে সরতে যেতে থাকলেও বীজতলা রোপনের জন্য উপযুক্ত করে তুলতে এখনও অনেকটা সময় লাগবে। এদিকে রোপা আমনের সময শেষের দিকে। তাই এই শেষ সময় আমনের বীজ রোপন করা সম্ভব নয়। এবারেব বন্যায় প্রান্তিক অঞ্চলে হওয়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর স্বার্থে পূণ:গঠনে কাজে মানুষকে পড়তে হবে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পানি নেমে যাওয়ার পর, এলাকাগুলোতে ফসলে চাহিদা ও আর্থসামাজিক অবস্থার কথা বিবেচনায় এনে আবাদ করা উচিত । যেহেতু আমন ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে তাই সেখানে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করা যেতে পারে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কৃষি পূর্ণবাসন।
এই দুর্যোগে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মানুষের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যেখানে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করা যেতে পারে সেখানে বীজ, সার ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করতে হবে। কৃষকদের জন্য কারিগরি সহায়তা ট্রেনিং সহ কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা যেতে হবে।
এ ব্যাপারে কৃষি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে। পাশাপাশি কৃষকদের স্বাস্থ্য ও কৃষি কাজের টেকসই পূর্ণবাসনে সরকারি ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি নন গভমেন্ট অর্গানাইজেশন এনজিও প্রতিষ্ঠান গুলোকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে । সর্বোপরি টেকসই বন্যা প্রতিরোধে সর্বস্তরের মানুষকে এক যুগে কাজ করতে হবে।
[লেখক ; কৃষিবিদ জুনায়েদ হোসেন জনি]
শিপ্র/শাহোরা/জুহোজ/