পলাশ প্রতিনিধি
নরসিংদীর পলাশে রোপা আমন ধান কাটা নিয়ে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ। এ বছর ধানের ভালো ফলন ও বাজারে উচ্চ মূল্যের কারণে কৃষকদের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। মাঠ জুড়ে সোনালী ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কৃষকের নিরন্তর ব্যস্ততা নতুন আশার আলো ছড়াচ্ছে।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পলাশে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, তাই উপজেলার প্রতিটা কৃষক রোপা আমন ধানের ফলনে বেশ খুশি। তারা ইতোমধ্যেই ধান কাটা ও মাড়াই করে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন।
পলাশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার একটি পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়নের আমন চাষের লক্ষ্মামাত্রা ছিল তিন হাজার ৫৬৫ হেক্টর । এর মধ্যে ধান চাষাবাদ করা হয়েছে তিন হাজার ৫৪৮ হেক্টর জমিতে। উপজেলার বেশির ভাগ চাষি এবার বিনা-১৭, ব্রি-ধান ৭৫, ব্রি-৮৭,ব্রি-৯৩ এবং ব্রি- ১০৩ জাতের ধান চাষ করেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা মেলে দিগন্ত কিস্তৃত ধান ক্ষেতে পাকা ধানে সোনালি রঙে শোভা ছড়িয়েছে। পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক ও ধান কাটা-শ্রমিকরা। শ্রমিকের পাশাপাশি ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্র।
আখতারুজ্জামান নামে এক কৃষক বলেন, চলতি আমন মৌসুমের শুরুতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে অনেকটাই শঙ্কায় ছিলাম, কিন্ত পোকামাকড়ের উপদ্রব না থাকায় আমাদের কষ্ট সার্থক হয়েছে। এবছর ধানের দরও সন্তোষজনক।
অপর কৃষক বদরউদ্দিন জানান, এবার বিঘা প্রতি জমিতে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ মন ধান পেয়েছি। যদিও বিঘা প্রতি ১০-১১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তারপরও এবার ভাল লাভের আশা করছি।
ধানচাষি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের জসিম মিয়া জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানের জমিতে খুব একটা সেচের প্রয়োজন হয়নি। সব মিলিয়ে মাত্র ৩-৪ দিন সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছে। এতে করে খরচটা অনেক কম হয়েছে। তাছাড়া এ বছর ধানে রোগ বালাই কম। তাই ধানের ফলনও ভালো হয়েছে।
পলাশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আয়েশা আক্তার জানান, চলতি আমন মৌসুমে ভালো আবহাওয়ার কারনে ধানের রোগ বালাইও অনেক কম ছিল তাছাড়া আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় উপজেলায় আমন ধানের উৎপাদন আশানুরূপ। ভালো ফলন হওয়ায় ধান চাষে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।
শিপ্র/শাহোরা/সাহো/