
নরসিংদী প্রতিনিধি
পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশে ক্ষুব্ধ হয়ে এর জেরে ধরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা আনিসুজ্জামান নামে একব্যক্তি। তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডির ওয়ালে ইব্রাহিম নামে একব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে এ ঘোষণা দেন। ওই ব্যক্তির ফেসবুকে দেয়া এ ঘোষণাকে গুরুতর অন্যায় এবং এর ফলে একজন নিরপরাদ ব্যক্তির সম্মানহানী করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন ইব্রাহিম নামে সৌদি প্রবাসী ওই ব্যক্তির স্ত্রী তাসলিমা বেগম।
বুধবার (২১ জুন) তাসলিমা বেগমের করা অভিযোগে তিনি বলেন, এর আগে তার করা অপর একটি অভিযোগের ভিত্তিতে নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্যরা ইব্রাহিমের দ্বিতীয় স্ত্রী মনিরা বিবাহিত জীবনের দুই বছর ঘর-সংসার করার পরও স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের যে মামলা করে তার সরেজমিনপূর্বক বেশ কয়েকটি পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। বিভিন্ন মিডিয়ায় এই সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর মনিরার ফুফা জসিমের বন্ধু আনিসুজ্জামান ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। পরে মঙ্গলবার তার ফেসবুক আইডিতে “একে ধরিয়ে দিন 🏃♂️🏃♀️ পুরস্কার ৫০,০০০/-” এই শিরোনামে ক্ষোভের বশে তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেয় যা রীতিমত অন্যায়। তিনি ওই মামলার বাদীও নয় কিংবা আইনশৃঙ্খলাকারী বাহিনীর সদস্যও নন। তাই উনার এই পোস্ট আমার স্বামী ইব্রাহিমের মানসম্মান ক্ষুন্ন করেছেন যা আইনত অপরাধ যোগ্য।
আনিসুজ্জামান চাঁদপুর ইউনিয়নের সওদাগর কান্দি গ্রামের মৃত সামসুজ্জামান চেয়ারম্যানের ছেলে, মূলত মনিরার ফুফার এই বন্ধু ভাতিজীতূল্য মনিরার রূপ যৌবনে আকৃষ্ট হয়ে মনে মনে পাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। আর সে জন্যই ইব্রাহিম হচ্ছে তার পথের কাটা। পথের এই কাটা সরিয়ে ফেলতে পারলে মনিরাকে পাওয়ার পথে তার আর বাধা থাকবেনা। তাই তিনি ইব্রাহিমকে সরাতে দীর্ঘদিন ছক আকছেন এবং ইব্রাহিমকে মনিরার জীবন থেকে সরাতে ও হয়রানি করতে বিভিন্ন কৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই জেরে মনিরা ও ইব্রাহিমের বিবাহিত জীবনের দুই বছর তারা এক সাথে কাটালেও মনিরাকে দিয়ে থানায় ধর্ষণের মামলা করিয়ে তাকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে আনায়। পরে তাকে দুই দফায় চার মাস কারাভোগসহ নাআ ভাবে হয়রানি করে আসছে।
এদিকে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ আনিসুজ্জামানের সরূপ উম্মোচন হচ্ছে এমনটা ভেবে কোন বিচার বিশ্লেষণ না করেই তার নিজের ফেসবুকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন। তার দেয়া পোস্টে তিনি ইব্রাহিম’র নাম গ্রামের বাড়ির ঠিকানা আদালতে মামলার নং এবং তিনি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনটি ফেসবুক আইডি ও ইমু থেকে তার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করবেন বলে উল্লেখ করেন।
এব্যাপারে নরসিংদী জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আলমগীর হোসেন বলেন, আনিসুজ্জামান নামে ওই ব্যক্তি তার ফেসবুকে যে পোস্টটি দিয়েছেন সেটা তিনি দিতে পারেন না। আইনগত সে অধিকার তার নেই। কাউকে ধরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরস্কার ঘোষণা বিষয়টি একমাত্র আদালতই দিতে পারে। তার এই পোস্ট আইসিটি আইন ভঙ্গ করেছে। ফলে তার বিরুদ্ধে মামলা করার যাবে।
আনিসুজ্জামানের সাথে কথা বলতে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোনে জানান, ইব্রাহিম নামে ওই লোকটির নামে আদালতে বিচারাধীন মামলাটির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তাই তিনি পোস্টে এ কথাটি লিখেছেন। পরে ইব্রাহিম এর স্ত্রী তাসলিমা বেগমের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি এই প্রতিবেদকের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন “তার কাছ থেকে আপনি কত টাকা খেয়েছেন” আমি আপনার বিরুদ্ধে মামলা করব বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
শিপ্র/শাহোরা/