
নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদীতে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে যৌক্তিক কোটা সংস্কারের দাবি এবং আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন কোটা বিরোধীরা। এসময় তারা মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ব্যারিকেড দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় আন্দোলনকারীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানার মোড়ে অবস্থান নিয়ে ঢাকার সাথে সিলেটসহ পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
পরে সন্ধ্যা ৭টায় অবরোধ প্রত্যাহার করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এসময় ছাত্রলীগ ও কোটাবিরোধী আন্দোলন কারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় ৬ জন আহত হয়।
এরআগে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী দুপুর সাড়ে তিনটায় কোটাবিরোধীরা জেলখানার মোড়ে জড়ো হতে শুরু করে। এসময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজালাল আহমেদ শাওন’র নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নরসিংদী মুসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটিয়ে তারা কোটাবিরোধীদের ধাওয়া দেয়। তাদের হামলায় ডেইলি স্টারের সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম, তিতুমির কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াদ আহমেদ, শিক্ষার্থী তাহসিন হাসান হিমু, আনোয়ার হোসেন, আলফাত মামুদ, সুজন ও ফুয়াদ নামে ৭ জন আহত হয়। পরে আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে বিকেল সাড়ে ৪টায় কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা একসাথে জড়ো হয়ে স্টেডিয়ামের সামনে থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে মহাসড়কের জেলখানার মোড় তাদের দখলে নেয়। এসময় ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন অলিগলিতে সটকে পড়ে।
পরে কয়েক হাজার আন্দোলন কারী জেলখানার মোড়ে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এসময় তারা বিভিন্ন প্লাকার্ড প্রদর্শন করে শ্লোগান দিতে থাকে। তারা মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ করে ও ব্যারিকেড দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার যানযটের সৃষ্টি হয়। ফলে ভোগান্তিতে পরে দূরপাল্লার যাত্রীরা। তবে জরুরী সেবার এম্বুলেন্সকে সাইড দিয়ে দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীদের একজন বলেন, আমাদের এক দফা দাবি । এই দাবিতে সারাদেশের ছাত্র সমাজের মত আমরা ও মাঠে নেমেছি। কোন সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।
আরেক আন্দোলন কারী বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনীরা আমাদের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে। তারা আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের ও ছাড় দেয় না। আমরা আমাদের ভাইয়ের রক্ত বৃথা যাইতে দেবো না। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো
নরসিংদীর ১০০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের হাসপাতালে তিনজন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঘটনাস্থলে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শহীদুল ইসলাম সোহাগ, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোকন সরকার ও নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সহ পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নেয়।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল) শহীদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, বিকেলে ছাত্রছাত্রীরা জেলখানার মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করে। তারা শান্তি পূর্ণ ভাবে তাদের দাবি ধাওয়া পেশ করে। আমরা জনগণের যানমালের নিরাপত্তার জন্য সর্তক অবস্থানে ছিলাম। তারা শান্তি পূর্ণ ভাবে অবরোধ প্রত্যাহার করলে মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শিপ্র/শাহোরা/সুব/