বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার তালতলীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে স্লিপ, রুটিন মেইনন্টেইনেন্স এবং প্রাক-প্রাথমিক শ্রেনীর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি উপজেলার মোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোসা. রওশন আরার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া যায়।
তালতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে স্লিপের বরাদ্দের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তিতে ২৫ হাজার টাকা করে দুই কিস্তিতে মোট ৫০ হাজার টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পায় মোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রুটিন মেন্টেইনেন্স এর জন্য ৪০ হাজার টাকা, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীর জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ পায়। এ সকল টাকা উক্ত খাতে ব্যবহারের কথা থাকলেও বিভিন্ন দোকানপাট থেকে স্বাক্ষর বিহীন ক্যাশ মেমো নিয়ে জাল স্বাক্ষর দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন মোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোসা. রওশন আরা।
ক্যাশ ম্যানো যাচাই-বাছাই করে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে স্লিপ এর ২৫ হাজার করে ৫০ হাজার টাকার প্রথম কিস্তির বরাদ্দের ৮ হাজার ৯০০ টাকা ও দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দের ১১ হাজার ২৮০ টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দের ১১ হাজার ৭০০ টাকার ভূয়া বিল ভাউচার তৈরি করে জাল স্বাক্ষর দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন।
বিল ভাউচারের মধ্যে মেসার্স জাহিদ ফার্নিচার নামে একটি দোকানের একটি ক্যাশ ম্যামো দেখানো হয়েছে অথচ ওই দোকনটি ২০২১ সালের শেষের দিকে বন্ধ হয়ে যায়। ওই বন্ধ দোকানের বিল ভাউচার ২২ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে ব্যবহার করা হয়েছে। বন্ধ দোকানের ভূয়া বিল ভাউচার ব্যবহারের কারসাজিতে রীতিমতো হতবাক হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
এছাড়াও প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীর জন্য বরাদ্দকৃত ১০ হাজার টাকার মধ্যে ৩ হাজার ১০০ টাকার বিল ভাউচারে ভূয়া স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের রুটিন মেইন্টেইনেন্স এর ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার ৭০০ টাকার ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা যায়।
মোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, ২১ টি ক্যাশ মেমোর মধ্যে ১১ টি ক্যাশ মেমো’র স্বাক্ষরের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি (জাল স্বাকর)। ভূয়া ভাউচার তৈরির কারসাজি বন্ধে, “সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. আল আমিন উপজেলায় যোগদানের পর থেকে মোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যে ক্লাস্টারে অধীনে তিনি ক্লাস্টারে দায়িত্বে ছিলেন। সে সময়ে প্রধান শিক্ষিকা মোসা.. রওশন আরার বিভিন্ন অনিয়ম, তদারকি, তদারকির নামে কর্মস্থল ফাঁকিসহ নিয়ম বহির্ভূত ক্লাস করানোর অভিযোগ করা হলেও তিনি সেগুলোর একটিও আমলে নেননি। বরং তাদের দুজনের গ্রামের বাড়ী একই জেলায় হওয়ার সুবাদে শিক্ষিকার নানা ধরনের তদবির করার সুযোগ মেলে।
এ ব্যাপারে মোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রওশন আরার সাথে যোগাযোগ করলে, গণমাধ্যমের কাছে কোনো প্রকার বক্তব্য দিতে রাজি নয় বলে জানান তিনি।
তালতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল বাশার বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি টাকা আত্মসাৎ করা কোনো সুযোগ নেই।