শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন

টিকটকার তরূণীকে নিয়ে সোনাগাজীতে তোলপাড়

Reporter Name / ১৬ Time View
Update : সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

শিরোনাম প্রতিদিন ডেস্ক

শিমরান সাদিয়া নামে ঢাকার এক টিকটকার তরুণী হঠাৎ সোনাগাজী জিরোপয়েন্টে এসে খুঁজতে শুরু করেন চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ। এক রিকশা চালক রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে তাকে চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যান। ওই টিকটকার চেয়ারম্যানের কাছে মৌখিক নালিশ করেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে। ঘটনা বিস্তারিত শুনে চেয়ারম্যান ওই তরুণীকে চৌকিদারের সাথে দিয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সভাপতির বাড়িতে পাঠান। এসময় তাদের সাথে ৪ জন স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীও ছিলেন। এসময় ছাত্রলীগ নেতা বাড়ীর সামনে এসে তরুণীকে ঘরে নিয়ে যান, শুরু হয় গুঞ্জন।

জানা যায়, শিমরান সাদিয়া ঢাকার পরিচিত টিকটকার। তার সাথে পরিচয় হয় মঞ্চ নাটকের অভিনেতা ও টিকটকার ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়। দুজনের মধ্যে গড়ে উঠে সখ্যতা। একারণে চাচাতো বোনকে নিয়ে সোনাগাজীতে বেড়াতে আসেন সাদিয়া। রবিবার দুপুরের দিকে তরুণী উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সাথে দেখা করেন এবং বিজয়ের সাথে তার সখ্যতার বর্ণনা দেন।

জানা যায়, চেয়ারম্যানের সাথে বিজয়ের রাজনৈতিক দ্বন্ধ রয়েছে। তরুণী চেয়ারম্যানের কাছে আসায় সে ঘটনাটি তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানোর সুযোগ পায়। এসময় টিকটকার ওই তরুণীর কথা শুনে ইউপি চেয়ারম্যান ৪ জন গ্রাম পুলিশ সদস্যের সাথে ওই তাকে ওলামা বাজার সংলগ্ন ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের বাড়িতে পাঠান। হাজির হয় ৪ জন স্থানীয় সাংবাদিক।

তরুণীর সাথে থাকা গ্রাম পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা বিজয়ের বাড়িতে তরুণীকে নিয়ে যাই। আমাদের উপস্থিতিতে ওই তরুণীকে ঘরে নিয়ে যায় বিজয়। সেখানে যে ৪ সংবাদকর্মী ছিলেন তারা ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছে। সাংবাদিকদের বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে বলে ওই তরুণী আর ফিরে না আসায় ক্ষিপ্ত হয় তারা।

টিকটকার সিমরান রবিবার সন্ধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমি শুটিংয়ের কাজে সোনাগাজীতে গেলাম। পরিচিত হওয়ার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি, বিজয় আমার পূর্ব পরিচিত। চেয়ারম্যানের কথা বার্তায় বুঝতে পারলাম, চেয়ারম্যানের সাথে বিজয়ের দ্বন্ধ আছে। চেয়ারম্যান মিলন আমাকে ব্যবহার করে বিজয়কে ঘায়েল করতে চায়। মুহূর্তের মধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল করে আমার এবং বিজয়ের বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। এখন মরা ছড়া আমার উপায় নেই। রাতে চেয়ারম্যানের সাথে এক কথোপকথনে সিমরান বলেন, ওই ভিডিও বার্তা দিতে আমি বাধ্য হয়েছি। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলবো। সোমবার সকালে অপর এক ভিডিওতে সিমরান বলেন, চেয়ারম্যানের সহযোগীতা চাইতে গিয়ে বিপদে পড়েছি, চেয়ারম্যান এর শাস্তি পাবে। আমার জন্য নিরপরাধ একটি ছেলে( বিজয়) বিপদে পড়েছে চেয়ারম্যানের ষড়যন্ত্রে।’

সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুর রহমান রাসেল বলেন, ‘ফেসবুকে খবরগুলো দেখে বিজয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রেমের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা বিজয় বলেন, ‘আমি নাট্যকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, ছাত্রলীগকর্মী ও সমাজকর্মী। আমার সাথে অনেকের পরিচয় আছে। এর আগেও আমার বাড়িতে এসেছেন অনেকে। পরিচয় জানতে মেয়েটি চেয়ারম্যানের দরবারে যায়, সেখানে এত ঘটনার জন্ম হয়েছে, এতে আমি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। প্রতিকার চাইতে আমি এবং সিমরান মামলা করবো।

এ ব্যাপারে চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, দুপুরের দিকে এক তরুণী সাথে আরো এক মেয়েকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে এসে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি বিজয়ের সাথে সম্পর্কের কথা বলেন। তারা বিজয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চাইলে, আমি গ্রাম পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে তাদের বাড়ি পাঠিয়েছি। সন্ধ্যার পর থেকে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়। সর্বশেষ রাত ১০টার দিকে ওই তরুণীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করি। মেয়েটি তখন বিজয়ের শেখানো মতে ভিডিও করেছে বলে জানিয়েছেন।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় পলাশ বলেন, ‘ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত হয়েছি। তবে থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

শিপ্র/শাহোরা/


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!