শিরোনাম প্রতিদিন ডেস্ক
যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। বর্তমানে প্রায় ২ লাখ উপজেলাবাসি এবং হাজারো বহিরাগতদের চিকিৎসা সেবায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৭ জন। এ অবস্থায় উপজেলা পর্যায়ে বার বার পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে চিকিৎসা সেবা হুমকির মুখে।
অভিযোগ উঠেছে আগে থেকে চিকিৎসক সংকট পাশাপাশি কয়েকজন চিকিৎসকের স্বেচ্ছাচারিতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
দেখা যায়, সকাল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি, আরএমও’র দায়িত্বে থাকা ডা.ইমরান এবং ডা. সুরাইয়া পারভিন জরুরি বিভাগসহ শত শত রোগীদের সেবা দিচ্ছেন এবং বিকালের শিফটে ডা.খন্দকার জুলকার ইসলাম দায়িত্ব পালন করেন।
হঠাৎ করেই চিকিৎসক সংকটের কারণ জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি বলেন দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসক সংকটে ভুগছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
তিনি বলেন, হাসপাতালে ১০টি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদের বিপরীতে অফিসিয়ালি আছেন ৫ জন। ১ জন ছুটি ছাড়াই ৬ মাস অনুপস্থিত এবং ২জন প্রেশনে অন্যত্র এবং একজন এনসথেসিষ্ট(অজ্ঞানের ডাক্তার)। আর আরএমও হিসেবে এখানে কেউই নেই। ১৯টা মেডিকেল অফিসার পদের বিপরীতে অফিসিয়ালি আছেন ৯জন। তাদের মধ্যে ৩৩ বিসিএসের ডা. মৃদুল কান্তি ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট জয়েন্ট করে ১দিন অফিস করে ১০ বছরের মধ্যে আর আসেননি। এবং মেডিকেল অফিসার ডা. শান্তা ১ বছর হাসপাতালে আসেন না। তারপরেও চলছিল কিন্তু হঠাৎ করে ৪জন মেডিকেল অফিসারের অন্যত্র বদলি হওয়াতে চিকিৎসক সংকট দেখা দিয়েছে। ডা. লাকি বলেন সকল বিষয়ে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সকল কিছু লিখিতভাবে জানিয়েছি।
বিশ্বস্ত সূত্র জানা যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গোলাম রসুল (অর্থপেডিকস্) কোন রকম ছুটি ছাড়াই ৬ মাস অন্যত্র চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং মেডিকেল অফিসার ডা. মৃদুল কান্তি ১০ বছর এবং ডা. শান্তা ১ বছর ধরে অনুপস্থিত থাকলেও তারা মূলত প্রবাসে আছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ এবং চিকিৎসা সেবার মান ভাল হওয়ার কারণে দিন দিন রোগীর সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে রোগী এবং তার সাথে থাকা ব্যক্তিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন। অন্যদিকে এই প্রচণ্ড তাপদাহে সামান্য কজন চিকিৎসক শত শত রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হাপিয়ে উঠছেন। তাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান অক্ষুন্ন রাখতে এবং অসুস্থ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে অতিদ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ।
শিপ্র/শাহোরা/