নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৭০ শতাংশই ব্যবসায়ী। এছাড়া সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে গত পাঁচ বছরে উপজেলা চেয়ারম্যানরা সংসদ সদস্যদের (এমপি) পেছনে ফেলেছেন।
সোমবার (৬ মে) প্রথম ধাপের নির্বাচনের ১৪৪টি উপজেলার প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এসব তথ্য জানায়।
ধানমন্ডিতে টিআইবির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বলেন, ‘২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে একই উপজেলাগুলোতে ৫৩ শতাংশ প্রার্থী ব্যবসায়ী ছিলেন। তার আগে ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে এসব উপজেলায় ৪৮ শতাংশ প্রার্থী ছিলেন ব্যবসায়ী।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের নির্বাচনে এক হাজার ৭২৩ জন, ২০১৯ সালের নির্বাচনে এক হাজার ৪৬৭ জন এবং এবারের নির্বাচনে এক হাজার ৬০৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রথম ধাপের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৭০ শতাংশ, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৯ শতাংশ এবং সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ২৪ শতাংশ ব্যবসায়ী।
এবারের নির্বাচনে ৯৪ জন চেয়ারম্যান, ১৭ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ৬ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ১১৭ জন প্রার্থীর প্রত্যেকের এক কোটি টাকা বা তার বেশি মূল্যের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে মোট ৪৫ জন প্রার্থীর এক কোটি টাকা বা তার বেশি মূল্যের অস্থাবর সম্পদ ছিল। ২০১৪ সালে ছিল ৩৪ জনের। এই ধরনের প্রার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বলেও জানায় টিআইবি।
পাঁচ বছরে অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধিতে উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা পেছনে ফেলেছেন সংসদ সদস্যদের। সংসদ সদস্যদের সম্পদ বৃদ্ধির হার ছিল সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৫ শতাংশ, যেখানে একজন চেয়ারম্যানের সম্পদ বৃদ্ধির হার ৪ হাজার ২০০ শতাংশের বেশি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলার মধ্যে ১৪৪টির প্রার্থীদের হলফনামা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে, বাকি আটটি করেনি। ১৫২টি উপজেলার তিনটি নির্বাচনের প্রায় চার হাজার ৮০০টি হলফনামায় দেওয়া আট ধরণের তথ্যের বহুমাত্রিক ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে প্রথম পর্বে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ১৩ জন। প্রার্থী হওয়ায় এগিয়ে ভাইয়েরা। চাচাতো ভাই, খালাতো ভাই, জামাতা ও ভাইয়ের ছেলে আছেন। এছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীর বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর বেশিরভাগ স্বতন্ত্র প্রার্থীই ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সমর্থনপুষ্ট।
উপজেলা নির্বাচন দলীয় হলেও নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক করতে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলগতভাবে কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। বিএনপি এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও তা অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করেছে দলটি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করা ২২ জামায়াত নেতা পরবর্তী সময়ে দলের সিদ্ধান্তে সরে দাঁড়ান।
শিপ্র/শাহোরা/