বিনোদন ডেস্ক
সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত ‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কিছু স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন, যারা বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করছিলেন। বিশেষভাবে, এই গ্রুপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি, চিত্রনায়ক রিয়াজ, সাজু খাদেমসহ আরও অনেকেই ছিলেন। তবে গ্রুপের প্রকাশিত স্ক্রিনশটে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন অভিনেত্রী তানভীন সুইটি, সোহানা সাবা ও অরুণা বিশ্বাস।
ফ্রান্স প্রবাসী লেখিকা জান্নাতুন নাঈম প্রীতি সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন। এরপরপরই তা নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করে। প্রীতি দাবি করেন, ‘আলো আসবেই’ নামক ওই গ্রুপে মোট ১৬০ জন সদস্য ছিলেন, যার মধ্যে অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনার নামও ছিল।
এটা নেটিজেনদের জন্য অবাক করার মতো ছিল, কেননা ভাবনা ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন এবং নিহত ছাত্র আবু সাঈদের প্রতিকৃতিসহ আন্দোলন নিয়ে বেশকিছু ছবি এঁকেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে সেসব ছবি প্রকাশ করে ছাত্রদের পক্ষে তার অবস্থান জানান দেন। কিন্তু প্রীতির অভিযোগ, ভাবনা আসলে ছাত্র আন্দোলন বিরোধীদের সঙ্গে ছিলেন, যা নেটিজেনদের অবাক করেছে।
প্রীতি তার পোস্টে লেখেন, সবচেয়ে বড় রসিকতাটা করেছেন আশনা হাবিব ভাবনা। তিনি ছাত্র আন্দোলনের আবু সাঈদকে নিয়ে ছবি এঁকে কান্নার অভিনয় করলেও এই গ্রুপে দিব্যি বসে ছিলেন!
তিনি আরো লেখেন, শিল্পী মানেই বিবেকবোধ ঠিক থাকবে, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার বোধ তৈরির জন্য-এদেরকে ধন্যবাদ। প্রীতি শিল্পীদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনে বলেন, শিল্পের নামে মানুষ হত্যা, সাধারণ ছাত্রদেরকে সন্ত্রাসী ট্যাগ দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু শিল্পী সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখেছেন।
প্রীতির এই পোস্টে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের শিল্পীদের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও এমন শিল্পীরা ছিলেন। ফলে আমরা অবাক হচ্ছি না। সবশেষে তিনি দেশের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, প্রিয় বাংলাদেশ, শিল্পী নামের এই সকল কলঙ্কদের চিনে নিতে তুমি প্রস্তুত তো?
এই বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য আশনা হাবিব ভাবনার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, তবে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ফোন নম্বরে কল করা হলে একজন পুরুষ কণ্ঠ ফোনটি রিসিভ করে জানান, এটি ভাবনার নাম্বার নয় এবং দ্রুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ফোনটি ব্যস্ত পাওয়া যায়।
এই ঘটনাটি শিল্পীদের ভূমিকা ও তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে, যা দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
শিপ্র/শাহোরা/