নিজস্ব প্রতিবেদক :
নরসিংদীর রায়পুরার সরকারি আদিয়াবাদ ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ-৯৫’র বন্ধুরা শিকড়ের টানে সবাই ছুটে এসেছে ব্যতিক্রম ধর্মীয় “চড়ুইভাতি” অনুষ্ঠানে। শুক্রবার (০৩ অক্টোবর ) বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে দিনব্যাপী বন্ধু রায়হানা সুলতানা শিলার আয়োজনে ‘চড়ুইভাতি’ অনুষ্ঠানটি এসএসসি ব্যাচ-৯৫’ র বন্ধুদের মিলনমেলায় পরিনত হয়।
সকাল থেকে সারাদিন আড্ডা,গল্প, হৈহুুল্লোর আর মাস্তির মধ্যে পার করেছে এসএসসি ব্যাচ-৯৫’ বন্ধুরা।
পৃর্বনির্ধারিত সময় সকাল ৯ থেকে এক এক করে অনুষ্ঠানস্থল বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এসে যোগ দিতে থাকেন এসএসসি ব্যাচ-৯৫’ র বন্ধুরা। সকাল ১০ টায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় অনুষ্ঠান স্থল।

অনেক দিন পর বন্ধুরা একে অপরের সাথে মিলিত হতে পেরে অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় একজন অন্যকে জড়িয়ে ধরে কৌশল বিনিময় করেন। অনেকে আবার শুরু করে পুরাোনা দিনের গল্প। তারা যেন কিছুক্ষণের জন্য ফিরে যান পুরোনো সেই শৈশব দিনে। সেই সময়কার কিছু স্মৃতি রোমন্তর করতে গিয়ে অনেককে পেয়ে যায় নষ্টালজিয়ায়।
বন্ধুদের এমন আবেগ, উচ্ছ্বাস বুঝিয়ে দিল বাঁধন আলগা হয়নি মোটেও, আছে প্রাণে প্রাণে।
পরে সকল বন্ধুরা একসাথে মাঠে গ্রুপ ফটোসেশন শেষে বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে স্মৃতিচারণ মূলক এক আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সরকারি আদিয়াবাদ ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলতাফ হোসেন, নাজমুল হক বাদল, জহিরুল ইসলাম আপেল, আজহার হোসেন,নিগার সুলতানা এ্যানি, হারুন অর রশিদ, মিল্লাত হোসেন, মেহেদী হাসান ও হান্নান মিয়াসহ আরও অনেকে।

স্মৃতিচারণ সভায় উপস্থিত অতিথি ও এসএসসি ব্যাচ- ৯৫’র বন্ধুরা বলেন, আমরা যারা গ্রামে জন্ম নিয়েছি তাদের অনেকেই চড়ুইভাতি’ এই নামটির সাথে শৈশব থেকে পরিচিত। কিন্তু আবার কেউ কেউ আছেন যারা একমাত্র বই পুস্তক ছাড়া এ শব্দটি বাস্তব সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
চড়ুইভাতি” বন বাদাড়ে চড়ুই পাখিদের কিচিরমিচির ডাকের ছন্দে সংগৃহীত খাবার একসাথে খাওয়া। এসএসসি ব্যাচ-৯৫’র বন্ধুদের জন্য কিন্তু সে আধলেই শৈশবের এ ব্যতিক্রম ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছে।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বক্তরা বলেন, আজকের অনুষ্ঠানচি ঠিক আমাদের সে শৈশবের চড়ুইভাতির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। শৈশবে বাড়ী উঠানে কলাপাতা আর ভেন্নেরপাতার ছানি দিয়ে ঘর তৈরি করে মাটির ছোট পাতিল যাকে বলে ঠুলি,-এর মাঝে বালি নিয়ে কাল্পনিক ভাবে ভাত রান্না,কাঠালপাতা দিয়ে তরকারি রান্না করে। তাইতো প্রবাদ বলতেন গ্রাম্য শিশু-কিশোররা ” রানলাম ভারলাম খাইলাম না, কার পেটে গেল দেখলাম না”!
বক্তরা বলেন, তবে বন্ধু “শিলা”র এ আয়োজন ছিল নতুন প্রজন্মকে সেই চড়ুইভাতি সাথে পরিচিত করিয়ে দেয়ার এক অভুতপূর্ব উদাহারণ।
অনুষ্ঠানে খাবারের প্লেটও ছিল কলাপাতা। ছিল সাদা ভাত আর শুটকির ভর্তা, উস্তেভা বাজি, আলুর ভর্তা, ডিম, মাছ, সবজি আর ডাল।
বিকালে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে চড়ুইভাতি’ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
শিপ্র/শাহোরা/