শিরোনাম :
দোকানে টিনের চালা কেটে দুর্ধর্ষ চুরি; নগদ অর্থসহ মালামাল লুট রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে জাতিসংঘের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবো: প্রধান উপদেষ্টা ‘ক্ষমতা মানুষকে পতনের দিকে নিয়ে যায়; ড. মঈন খান’ ঝিনাইদহে শিক্ষার্থীর গলায় ছুরি ধরে ধর্ষণের অভিযোগ রাজশাহীতে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে কর্মী নিহত, ২ নেতা বহিষ্কার বাবা-মায়ের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত আরেফিন সিদ্দিক চট্টগ্রামে আ. লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৫০ নেতাকর্মী গ্রেফতার কুমিল্লায় চাঁদা না দেওয়ায় প্রবাসীকে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার হামলা আমির খানের ৬০ তম জন্মদিনে নতুন প্রেমিকা গৌরী স্প্রাট জাতীয় দলে পঞ্চপাণ্ডবের অবসরের সাক্ষী হয়নি দেশের মাঠ ও সমর্থকরা
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৫ অপরাহ্ন

আদালতের নির্দেশনা অমান্য ! কার্যক্রম চালাচ্ছে শিবপুর প্রেসক্লাবের অবৈধ কমিটি

Reporter Name / ৬৬ Time View
Update : রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর শিবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির পদ থেকে নিজের ব্যক্তিগত কর্মব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সেচ্ছায় পদত্যাগ করলেও বর্তমানে স্বীয় পদ বহন করে চলেছেন এস এম খোরশেদ‌ আলম। সর্বত্র নিজেকে শিবপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি পরিচয় দিয়ে আসছেন। শুধু তিনিই নন বাতিলকৃত ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব শেখ মানিক তিনিও সেই পরিচয় দেন। আব্দুর রব শেখ মানিক যিনি জালিয়াতি আশ্রয় নিয়ে ক্লাবের সদস্য পদ লাভ করেছিলেন। তার সেই জালিয়াতির চিত্র আজ প্রকাশ্যে এসেছে। ফলে শিবপুরের সাংবাদিকসহ সর্বমহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

জানা যায়, গত ১৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে শিবপুর প্রেস ক্লাব কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু শিবপুর প্রেস ক্লাব সংক্রান্ত দেওয়ানী মোকদ্দমা নং- ৯৯/২০২৩ মূলে বাদী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ বিজ্ঞ আদালত ক্লাবের সকল কার্যক্রম স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার এক আদেশ প্রদান করেন। আদালতের সেই আদেশটি নব নির্বাচিত কার্য নির্বাহী কমিটি ও আহ্বায়ক কমিটির দৃষ্টিগোচর হয় নির্বাচন অনুষ্ঠেয় হওয়ার ২ দিন পর। আদালতের সেই আদেশ বলে নির্বাচিত সেই ফলাফল ও কমিটি বাতিল হবে এমনটা ভেবে সুচতুর খোরশেদ গত ২৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে নিজের ব্যক্তিগত কর্মব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সভাপতির পদ থেকে সেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। তিনি তার পদত্যাগ পত্রটি ক্লাবের আহবায়কের কাছে জমা দেন। আদালতের সেই আদেশটি ক্লাবের নির্বাচিত কমিটির নজরে আসলে কার্য নির্বাহী কমিটির সভাপতি খোরশেদসহ ৯ জন সদস্য আহবায়কের কাছে জমা দেয়। কার্য নির্বাহী কমিটির ১১ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জন পদত্যাগের পর আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় নির্বাচন বিষয়ে নতুন করে কোন জটিলতা সৃষ্টি না হয় তার জন্য আহ্বায়ক কমিটি ও নির্বাচন কমিশনের এক সভায় শিবপুর প্রেস ক্লাবের নির্বাচন সংক্রান্ত সকল প্রক্রিয়া বাতিল করেন এবং নির্বাচিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, ক্লাবের কয়েক সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করা হলে, মো. করিম খন্দকার এবং মো. মাসুম নামে দুজন সাংবাদিক মোহাম্মদ কামাল হোসেন প্রধান (আহবায়ক), এসএম খোরশেদ আলম (সাবেক সভাপতি), এস এম আরিফুল হাসান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক), মো. আজমল হোসেন ভূইয়া (সাবেক কোষাধক্ষ) এই চারজনকে আসামি করে নরসিংদীর বিজ্ঞ শিবপুর সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। যা দেওয়ানি মোকাদ্দমা নং ৯৯/ ২০২৩। ওই মামলায় আদালত বাদী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ক্লাবের সকল কার্যক্রম স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার আদেশ প্রদান করেন।

বর্তমানে বিলুপ্ত হওয়া সেই কমিটির সভাপতি এস এম খোরশেদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব শেখ মানিক বর্তমানে তারা বিভিন্ন জনের কাছে নিজেদের অবৈধ সেই পদ পরিচয় দেয়াসহ সামিাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটার্স দিচ্ছেন। সেচ্ছায় অবৈধ পদ থেকে পদত্যাগ করার পর নিরলজ্জের মতো চাঁদাবাজির হাতিয়ার হিসেবে বিভিন্ন স্থানে সভাপতি পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছে এস এম খোরশেদ আলম।

জানা যায় বিগত কয়েক বছর যাবৎ এই খোরশেদ আলম শিবপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্ব পালন কালে ক্লাবের উন্নয়নের কথা না ভেবে নিজের আখের গুছিয়ে গেছেন। গত কয়েক বছরে তিনি নিজে কোটিপতি হলেও ক্লাবকে পরিনত করেছেন দেওলিয়া সংগঠনে। গত কয়েক বছরে তার বাড়ীর টিনের ঘরের উন্নয়ন হয়ে তা বিলাসবহুল অট্টালিকায় রূপ নিলেও কোন উন্নয়নই হয়নি শিবপুর প্রেসক্লাবের। বরং তার সাধারণ সম্পদক থাকায় অবস্থায় ২০১৭ সালে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সভাপতি পদে থাকা জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে ক্লাবের কার্যালয়ের ভাড়া বাবদ প্রায় এক লাখ ৯৭ হাজার বকেয়া পড়ে। আর বকেয়া পরিশোধে নোটিশ প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। যা শিবপুর প্রেস ক্লাব গঠনের পর এমন কোন নজির নেই। ক্লাবের সদস্যদের অভিযোগ নিয়মিত ক্লাবের চাঁদা পরিশোধ করে আসলেও, প্রেস ক্লাবের ভাড়া বাবদ ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা বকেয়া থাকে কি ভাবে? কেন এতো মাস ক্লাবের ভাড়া পরিশোধ করা হয়নি এই প্রশ্ন আজ ক্লাবের সাধারণ সদস্যদের।

শুধু তাই নয়, এই সেই খোরশেদ আলম যার বিরুদ্ধে শিবপুর প্রেসক্লাবের বাহিরে থাকা সাংবাদিকদের দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে পরে এর মধ্যস্থতার মাধ্যমে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে ।

বিলুপ্তকৃত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব শেখ মানিক তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে শিবপুর প্রেসক্লাবের সদস্য পদ লাভ করেন। তার এই জালিয়াতির প্রকাশ্যে এসেছে। আব্দুন রব শেখ মানিক যে সময় শিবপুর প্রেস ক্লাবের সদস্য পদ লাভ করেন সেসময় ক্লাব কর্তৃপক্ষ সদস্য অন্তর্ভুক্তির দরখাস্ত আহবান করলে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ক্লাবের সদস্য পদ লাভ করে। তিনি তার ১৯৯৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে যার জাল ও ভূয়া সার্টিফিকেট তৈরি করে অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে জমা দেয়। অথচ তার তৈরিকৃত সার্টিফিকেটে যে স্কুলের নাম দেয়া হয়েছে সেই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক ১৯৯৮ সালে তার স্কুল থেকে আব্দুর রব শেখ নামে কোন ছাত্র এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি বলে একটি প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছেন।

স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বর্তমানে এস এম খোরশেদ আলম ও আব্দুর রব শেখ মানিক হয়ে উঠেছেন বিধ্বংসী। তারা অবৈধভাবে প্রেস দখল করে নিজেদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে বিগত বছরের শেষদিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে বিলুপ্তকৃত কার্যকরি কমিটি বৈধ কমিটি জাহির করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে জানান। প্রেস ক্লাবের সকল কার্যক্রম স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার আদালতের নিশেধাজ্ঞা সত্ত্বে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন আর সেই কমিটিকে আদালত ব্যতিত অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বৈধতা দিতে পারে না। প্রেস ক্লাবের অবৈধ দখলদাররা নিজেদেরকে বৈধ বলে দাবী করে ইউএনও কাছে চিঠি এবং এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের নিরব ভূমিকার ফলে অবৈধ এই পদদারীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে শিবপুর প্রেসক্লাব। ফলে শিবপুরে সাংবাদিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে।

খোরশেদ আলম বলেন, কোর্টে চলমান মামলাটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয় ব্যক্তি বিশ্বের বিরুদ্ধে। তাই আমাদের কমিটি অবৈধ না। কে বলেছে অবৈধ। আপনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার সভাপতি পরিচয় দিতে কোনো বাধা নেই। পদত্যাগ পত্র ভুলে দিয়েছি। পরের দিন আবার তা উঠিয়ে নিয়েছি।

শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ্ মো. সজীব বলেন, আমার মোবাইল ও হুয়াট অ্যাপ নাম্বার সবার জন খোলা (ওপেন টু অল)। আমাকে হুয়াট অ্যাপে দেওয়া মানেই, জানিয়ে রাখা নয়। সাংবাদিকদের সর্ম্পকে আমার কোনো বক্তব্য নাই। তাদের নিজেদের সংগঠন , তারা নিজেদের মতো করে চালাবে।

শিপ্র/শাহোরা/


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!