নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদীর রায়পুরার মেঘনা নদীতে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনে বাঁধা দেয়ায় ইউপি সদস্যকে প্রাণনাশের চেষ্টাসহ তার ও লোকজনের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার(৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল বাঁশগাড়ী ইউপির ২ নং ওয়ার্ড সদস্য এরশাদ মিয়া রায়পুরা থানায় অবৈধ বালু সিন্ডিকেটের হোতা বাঁশগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকির ও তার সমর্থকসহ মোট ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়, বাঁশগাড়ি-চরমধুয়া এলাকার মেঘনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছে ইউপি রাতুল সিন্ডিকেট। কিন্তু জনগণের স্বার্থে এতে বাধসাদেন স্থানীয় ইউপি সদস্য এরশাদ মিয়া। মেঘনা নদী থেকে অবৈধ এই বালু উত্তোলনে তিনি বাধা দিলেন তাকে প্রাণনাশের হুমকি সহ হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল ওই বালু সিন্ডিকেটের লোকজন। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাঁশগাড়ি ইউপি বর্তমান চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকির (৪০) এর নেতৃত্বে চরমধুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আমান উল্লা আমান(৪৫), সালাম সিকদার (৬৫), লিটন মিয়া (৩৫), হারুন মিয়া (৩৮), রুবেল (ছোট) (৩২),হানিফা (৪৪), ইউনুছ আলী(৪৫), মনির পচা মনির (৩৮)সহ একদল অস্ত্রধারী তাহাদের হাতে থাকা অবৈধ বন্দুক, ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ইউপি সদস্য এরশাদ মিয়কে হত্যার উদ্দেশ্যে বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের দিঘলিয়াকান্দি গ্রামে তার বাড়িতে এসে হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়ি ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। এদিকে ইউপি সদস্য প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। হামলাকারীরা ধাওয়া করে। এ অবস্থা দেখে তার ভাই শাহরিয়া চিৎকার দিয়ে উঠলে তাকেও ধাওয়া করে। পরে তাকে উদ্দেশ্য করে সেগুলি তার পায়ে এসে বিদ্ধ হয়। এ সময় তাদের হামলায় রাসেদ মিয়া, রবিউল, ওয়াসিম, কালাম মিয়া সহ আরও অনেককে তোর আহত হয়। হামলাকাররা ইউপি সদস্য এরশাদ মিয়া বাড়িছাড়াও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট এর ঘটনা ঘটায়। এ সময় তারা উভয়ের বাড়িতে বেশ কয়েকটি ঘরসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
হামলার ঘটনায় প্রতিপক্ষের আঘাতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য এরশাদ মিয়া বলেন, বাঁশগাড়ি ও চরমধুয়া এলাকায় মেঘনা নদীতে গত কয়েকদিন যাবত ৫-৭টি অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলো বাশ গাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রাতুল হোসেন জাকির সহ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা ও বিএনপির কথিত এক প্রভাবশালী নেতা এই চক্রের সাথে জড়িত। মেঘনা নদী হতে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদী পাড়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ফলে ব্যাপক ক্ষতি মুখে পড়ছে নদী পাড়ের মানুষ। এলাকার জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুবাদে জনগনের চাপের মুখে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে বাঁধা আমি বাধা দেই। এরপর থেকে আমার মোবাইল ফোনে তারা আমাকে তারা বিভিন্ন সময় ভয়ভীতিসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেন। পরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাঁশগাড়ি ইউপি বর্তমান চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকির (৪০)এর নেতৃত্বে সহযোগীরা আমার প্রাণনাশের চেষ্টা চালায় বাড়িঘরে ভাঙচুরসহ নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়।
অবৈধ এই বালু সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতরা এলাকায় নিয়মিত অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবীসহ আমরা মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এর জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দাবি করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, এখন না দেশ স্বাধীন হয়েছে। এখনো কি করে অস্ত্র গুলাবারুদ নিয়ে মহরা হামলা লুটপাট করে। জীবনের নিরাপত্তা কে দিবে? আপনাদের সামনে তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেও ভয়।
এ ব্যাপারে বাশগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকিরের মোবাইল ফোন ০১৬১৭-৮০৩০৭৫ এই নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ না করায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার অভিযোগের বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান। মাগরিবের নামাজ শেষে থানায় যাননি তবে অল্প সময়ের মধ্যে যাবেন। এ ব্যাপারে গত পরশু বাঁশগাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তাকে জানিয়েছিলে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে এলকায় ধাওয়া পাল্টা দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। তবে এ ব্যাপারে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনিবলে জানিয়েছিলেন তিনি।
শিপ্র/শাহোরা/রহর/